একসময়ের মশলা আর মসলিনের বাংলা এখন পাহাড়, অরণ্য, মন্দির, নদী, সমুদ্রে পরিবেষ্টিত বৈচিত্র্যময় পর্যটনের রূপসী বাংলা । তারই মায়ায় ছুটে চলি আমি। শুধু তারিয়ে তারিয়ে সেই রূপ দেখব বলে আর ফিরে এসে তাকে নিয়ে লিখব বলে।
বেড়াতে যাবার আগেই প্রতিবার ভাবই রাজ্যেই কোথাও একটা যাব কিন্তু পূর্ব অভিজ্ঞতা আমাকে তাড়িয়ে নিয়ে যায় রাজ্যের বাইরে। আমাদের রাজ্যে D আছে কিন্তু C নেই। D মানে ডেষ্টিনেশন, D মানে ডাইভার্সিটি। কিন্তু C এর অভাব। এই মূহুর্তে মনে হচ্ছে আমার রাজ্য এ একটা C জ্বলজ্বল করছে সেটা হল cheap কিন্তু এর সাথে বাকী C গুলো absent. we can compromise on COST but in lieu of that expect convinience and comfort । কিন্তু ট্র্যাভেলিংয়ের সবকটি প্যারামিটার কি পাই আমরা? অথচ উত্তরে হিমালয়, ডুয়ার্স থেকে দক্ষিণে সাগরদ্বীপ, সুন্দরবন, পশ্চিমে পুরুলিয়ার অযোধ্যাপাহাড়, গড়পঞ্চকোট থেকে পূর্বে মেদিনীপুরের কুরুম্ভেরা ফোর্ট কিম্বা গনগনির মাঠ? কত কত সুন্দর জায়গা এ রাজ্যে, শুধু ট্যুরিজমের ইন্ফ্রাস্ট্রাকচার নেই।
তবুও গ্রীষ্মে যাই উত্তরবাংলায় তো শীতে ঝাঁপ দি সাগরের বুকে।
হিমালয়ের কোলে অপূর্ব পাহাড়ি গ্রামে যাই, দুটিপাতা-একটি কুঁড়ির স্বর্গরাজ্যে। রোদের কণা লুটোপুটি খায় চা-পাতায়। দিগন্তের নীল আর সবুজের মাখামাখি দেখে মনে পড়ে রবিঠাকুরকে... আলোর নাচন পাতায় পাতায়, এই তো ভালো লেগেছিল ।
গরুমারায় জিপ সাফারি। ভোর হতে না হতেই ময়ূরের ঘুম ভাঙানিয়া কর্কশ ডাক শহুরেদের কানে মিষ্টি লাগে । জিপের ধারালো হাওয়ায় আবার শীতকে নতুন করে পাওয়া । জঙ্গলমহল থেকে বেরিয়ে আসা বাইসন, হরিণ অথবা মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া সবুজ পায়রা, ঠোঁটসর্বস্ব ধনেশ পাখি! ডিজিটাল ক্যামেরায় ক্লিক, ক্লিক! ভীতু বনমোরগের পেছনে ছুটতে ছুটতে দেখি গন্ডার! কি রাজকীয়! আমার রূপসী বাংলার ঐশ্বর্য্য এরা।
শীতের রোদের গনগনে আঁচে ছুটে যাই সাগরের দিকে । সুন্দরবনের নোনা জল ছুঁই আর আমার মনখারাপের সব ঢেউগুলো আছড়ে পড়ে সেখানে। বাংলাকে আমি যেন নতুন করে পাই তখন। সুন্দরবন নামটিতে যতটা সৌন্দর্য্য ঠিক ততটাই সুন্দর তার ভৌগোলিক চেহারা। সেখানে মানুষের প্রতিনিয়ত ডাঙায় বাঘ আর জলে কুমীর নিয়ে বেঁচে থাকা । চরাচর জুড়ে নোনাজলের ঐশ্বর্য্য যার অনন্ত, অসীম জলরাশির মাঝে লুকিয়ে থাকে অগণিত সজীব আর সবুজ। গল্পকারের ভাষায় যা হয়ে ওঠে মূর্ত, ভ্রমণপিপাসুর কলমে যা হয়ে ওঠে আরো প্রাণবন্ত। কালের স্রোতে তার ভূগোল পুরোনো হয়না এই বায়োডাইভার্সিটির অন্যতম নিদর্শনে ।
কাজের চাপে শীত ফুরায়। ভাবতে ভাবতেই দোল ফুরোয় । অমৃত কমলার মিঠে রোদ, উলকাঁটার দুপুর গড়িয়ে সেদিন চৈত্রমাস। চৈত্রের গনগনে আগুণ দুপুরবেলা । কখনো পাতাঝরার টুপটাপ আর পলাশ-শিমূলের শুকনো ডালে কোকিলের ডাক । মনে পড়ে অক্ষয়কুমার বড়ালের মধ্যাহ্নের ছবি । নিথর চৈত্র ফাগুনে তালদিঘীতে রাজহংসীর মাথা ডুবিয়ে দুপুরস্নানের ফাঁকে গেঁড়ি গুগলি দিয়ে মধ্যাহ্নভোজন। সিঁদুরে ল্যাটেরাইট মাটিতে পা দিয়েই গনগনির মাঠ। ওদিকেই শিলাবতী নদীর বিছানা পাতা । শীতে অনেকটাই শুষ্কতা শিলাইয়ের বুকে । আবার ভরাবর্ষায় রূপ দেখাবে সে । লালমাটির খেয়ালে কি বিচিত্র সৃষ্টি হয়েছে। যেন পাহাড়ের গায়ে কে খোদাই করে রেখেছে গ্রামবংলার চালাঘর, মন্দির, বারান্দা, কুঠিবাড়ি, সাধুসন্ত , বারান্দা । যেন কালের স্রোতে ধুয়ে গিয়েও ক্ষয়ে যায়নি । অথচ এটা কৃত্রিম নয় । এ হল বাংলার গ্র্যান্ডক্যানিয়ন।
কোনোবার বসন্তের ভোরে ছুটে গেছি লালমাটির দেশে। সকালের মিষ্টিরোদ এসে পড়েছে শালবনের মাথায়, বসন্তের কচি সবুজপাতায় । চেনাপথ যেন আরো নবীন সজীবতায় । সজনে গাছ তার ভর-ভরন্ত রূপ নিয়ে, সজনেফুলের গন্ধ মেখে পলাশ তার লাল নিয়ে । পৌঁছে গেছি সত্যজিত রায়ের প্রিয় শুটিং স্পট মামাভাগনে পাহাড়ে। নীল এক আকাশের নীচে একসাথে কত জীবন্ত পাহাড়ের শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থান। কেউ যেন একটা বিশাল অঞ্চল জুড়ে, অগোছালো করে রেখে দিয়ে গেছে কত কত পাথর, নানা আকৃতির কত কত নাম না জানা পাহাড় হয়ে উঠেছে সেগুলো । ছোট, বড়, মেজো, সেজো, ন', রাঙা, ফুল, কুট্টি, আন্না !
ভোরের গোলাপী কুয়াশা দিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাই পাঞ্চেত পাহাড়ের গায়ে গড়পঞ্চকোট। পাহাড়ে ট্রেকিং। নামের উত্সমূলে পঞ্চকোট পাহাড়। পুরাণের পাঁচটি চূড়াবিশিষ্ট শেখর পর্বত। শাল-মহুয়া-পলাশ-আকাশমণির জঙ্গল পরিবেষ্টিত পাহাড়ের মাথায় নদীর ঝোরা আর অতি প্রাচীন রঘুনাথজীর মন্দির । নীচে প্রবেশদ্বারেই দুয়ারবাঁধ তোরণ, পোড়াইঁটের পঞ্চরত্ন মন্দির, রাসমন্দির, রাণিমহল সবকিছুই ছিল একসময়, সব মিলিয়ে যার নাম গড়পঞ্চকোট ।
এই মন্দিরের প্রতি আমার একটু দুর্বলতা আছে। প্রাচীন মন্দিরের ঐতিহ্যময়তা, গঠনশৈলী আর এদের ঘিরে পুরোণো কিংবদন্তী আমাকে টেনে নিয়ে চলে মেদিনীপুরের পাথরা গ্রামে কিম্বা কুরুম্ভেরা দুর্গে। মেদিনীপুর থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে এই পাথরা গ্রাম । যেখানে মন্দির যেন আজো কথা বলে ওঠে। মন্দিরময় পাথরা গ্রামে রয়েছে চৌত্রিশটি এমন পুরোণো মন্দির। মেদিনীপুরের পথ, পাথরার রাস্তা খুব ভাল । ধান খেতের সবুজ চলল আমাদের হাত ধরে । পেরোলাম মাইলের পর মাইল আলুর খেত, গাঁয়ের বীথিপথ। শীতের শুকনো ঝরাপাতাদের পেছনে ফেলে রেখে চললাম কোকিলের ডাক শুনতে শুনতে । ইউক্যালিপটাস, সোনাঝুরি, কদম, সেগুন আর বাঁশ ঝাড়ের সারি ।
পরিত্যক্ত ভাঙা মন্দির পেরিয়ে কাঁসাই নদী দেখা গেল আর বাঁদিকে এল সেই মন্দিরময় পাথরা গ্রাম ।
ছোট মন্দির, বড় মন্দির, মন্দিরের ধ্বংস স্তূপ আর মন্দিরের সংলগ্ন গ্রাম, খেত খামার, ধানের গোলা, পুকুর কি নেই এখানে । নানান ধরণের, নানান গড়নের । এক একটির ভাস্কর্য এক এক রকম ! তবে সবকটি মন্দিরই বাংলার ট্র্যাডিশানাল চালাঘরের আদতে বানানো । মন্দিরময় পাথরা গ্রামটির মানুষজন যেন যুগযুগ ধরে মন্দিরগুলিকে বুকে করে আগলে আসছে । মন্দিরের গায়ের লেখা থেকে জানা গেল যে সেগুলি প্রায় ৫০০ বছরের পুরোণো।
খড়গপুর থেকে কেশিয়াড়ির পথ ধরে কিছুদূর গেলেই পড়বে বিশাল দুর্গময় কুরুম্ভেরা। বাইরে বিশাল উঁচু প্রাচীর পরিবেষ্টিত দুর্গটি দশ ফুট উঁচু এবং বিশাল মাঠের মধ্যিখানে প্রায় ৩০ বিঘে স্থান জুড়ে এই দুর্গ ।
পাথর দিয়ে কেটে কেটে তৈরী । যেন চক মিলোনো রাজপ্রাসাদ ! একদিকে উঁচুতে নাটমন্দিরে তিনটি মন্দিরের গড়নে স্থাপত্য রয়েছে ।
এর মধ্যে একটি শিব মন্দির আছে । ওড়িয়া লিপি থেকে জানা যায় ১৪৩৮-১৪৬৯ সালে তৈরী হয়েছিল এই ফোর্টটি । ছমছমে দুর্গপুরীর দুর্গের নাম "কুরুম্ভেরা"। গুগলম্যাপ দিশা দেখিয়ে দেয় অচেনা ও অজানা এই সব পথের। নিজের শহরের এত কাছে আর্কিওলজিক্যাল সোশাইটির দেখভালে এত সুন্দর মন্দির আর দুর্গ যে রয়েছে তা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবেনা।
আর আমার রূপসী বাংলার উইকএন্ডগুলোর কথা? ডায়মন্ডহারবারের গঙ্গার ধারে ফলতা কিম্বা বাসন্তী এক্সপ্রেসওয়ে ধরে সোজা ইছামতীর ধারে বিভূতিভূষণের স্মৃতিবিজড়িত টাকী? অথবা বসন্তের পাহাড়ে পলাশের আগুণ লাগা মুকুটমণিপুর কিম্বা মন্দারমণি বা শঙ্করপুরের সমুদ্রসৈকতে । চব্বিশ ঘন্টার ফুরসত মিললে শঙ্করপুর বেশ উপভোগ্য। সাদাবালির চরে একলহমায় সমুদ্র তট দেখে পরখ করতে হয় নোনা জলের সাদাফেনায় ছুটে আসা জলের রঙ, ঢেউয়ের পরে ঢেউয়ের আনাগোনায় আছড়ে পড়া মুঠো মুঠো ঝিনুক, তারা মাছ, শঙ্কর মাছেরা, বালির চরে আসর বসায় । দলবেঁধে আসা বকের সারি উড়ে যায় ক্যাসুরিনার ফাঁক দিয়ে, খেয়ে যায় বাঁশপাতা মাছ সমুদ্রের তট থেকে, ঢেউ এসে নিয়ে যায় বিকেলের সূর্যাস্তের রং। সব মনখারাপের দুপুরগুলো আছড়ে পড়ে সেই ঢেউতে । ক্লান্ত সূর্য তখন আপন মনে রঙ ছড়িয়ে চলে পূর্ব মেদিনীপুরের পশ্চিম আকাশের গায়ে। সন্ধ্যেবেলা ছমছমে সমুদ্রতটে শুধু ঢেউয়ের গর্জন । প্রতিদিন সূর্যের এই অবসর নেওয়ার মূহুর্তে ঝাউবনে পাখ-পাখালির ঘরে ফেরার কলরব আর বালির চরে ঢেউয়ের আছড়ে পড়ার শব্দ, নিঝুম নিসর্গকে নতুন করে পৌঁছে দেয় মনের আঙিনায় । সূর্যাস্তে শঙ্করপুর একরকম আর সূর্যোদয়ে অন্যরকম ।
প্রত্যূষে উত্তরদিকে তখনো জ্বলজ্বলে ধ্রুবতারা আর পশ্চিম আকাশে শুকতারা । অন্ধকার ভোরে কত রকমের শাঁখ ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে আসে আর আসে চিতি কাঁকড়ারা ছটফট করে ধেয়ে । সমুদ্রের বুকে জন্ম নেয় নতুন ঢেউ আর তীরে এসে ভাঙে । দেখতে দেখতে পুব আকাশের গায়ে রঙ ছেটাতে আসে ভোরের বালক সূর্য । আকাশ চিরে চিরে লাল, নীল, গোলাপী রঙের দাগ আর লুকোচুরি খেলতে খেলতে সেই আবীর রঙা আকাশের কোল থেকে উঁকি মারে সে ।
রূপসীবাংলার গল্প এক বৈচিত্র্যময় রূপকথার মত। এ গল্প ফুরোয়না। কালেকালে আরো যেন রূপবতী হয় আমার বাংলা। থৈ থৈ তার রূপ লাবণ্য নিয়ে।
বেড়াতে যাবার আগেই প্রতিবার ভাবই রাজ্যেই কোথাও একটা যাব কিন্তু পূর্ব অভিজ্ঞতা আমাকে তাড়িয়ে নিয়ে যায় রাজ্যের বাইরে। আমাদের রাজ্যে D আছে কিন্তু C নেই। D মানে ডেষ্টিনেশন, D মানে ডাইভার্সিটি। কিন্তু C এর অভাব। এই মূহুর্তে মনে হচ্ছে আমার রাজ্য এ একটা C জ্বলজ্বল করছে সেটা হল cheap কিন্তু এর সাথে বাকী C গুলো absent. we can compromise on COST but in lieu of that expect convinience and comfort । কিন্তু ট্র্যাভেলিংয়ের সবকটি প্যারামিটার কি পাই আমরা? অথচ উত্তরে হিমালয়, ডুয়ার্স থেকে দক্ষিণে সাগরদ্বীপ, সুন্দরবন, পশ্চিমে পুরুলিয়ার অযোধ্যাপাহাড়, গড়পঞ্চকোট থেকে পূর্বে মেদিনীপুরের কুরুম্ভেরা ফোর্ট কিম্বা গনগনির মাঠ? কত কত সুন্দর জায়গা এ রাজ্যে, শুধু ট্যুরিজমের ইন্ফ্রাস্ট্রাকচার নেই।
লাটাগুড়ির কুয়াশামাখা অরণ্য |
তবুও গ্রীষ্মে যাই উত্তরবাংলায় তো শীতে ঝাঁপ দি সাগরের বুকে।
হিমালয়ের কোলে অপূর্ব পাহাড়ি গ্রামে যাই, দুটিপাতা-একটি কুঁড়ির স্বর্গরাজ্যে। রোদের কণা লুটোপুটি খায় চা-পাতায়। দিগন্তের নীল আর সবুজের মাখামাখি দেখে মনে পড়ে রবিঠাকুরকে... আলোর নাচন পাতায় পাতায়, এই তো ভালো লেগেছিল ।
গরুমারায় জিপ সাফারি। ভোর হতে না হতেই ময়ূরের ঘুম ভাঙানিয়া কর্কশ ডাক শহুরেদের কানে মিষ্টি লাগে । জিপের ধারালো হাওয়ায় আবার শীতকে নতুন করে পাওয়া । জঙ্গলমহল থেকে বেরিয়ে আসা বাইসন, হরিণ অথবা মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া সবুজ পায়রা, ঠোঁটসর্বস্ব ধনেশ পাখি! ডিজিটাল ক্যামেরায় ক্লিক, ক্লিক! ভীতু বনমোরগের পেছনে ছুটতে ছুটতে দেখি গন্ডার! কি রাজকীয়! আমার রূপসী বাংলার ঐশ্বর্য্য এরা।
শঙ্করপুরের সমুদ্র তটে |
শীতের রোদের গনগনে আঁচে ছুটে যাই সাগরের দিকে । সুন্দরবনের নোনা জল ছুঁই আর আমার মনখারাপের সব ঢেউগুলো আছড়ে পড়ে সেখানে। বাংলাকে আমি যেন নতুন করে পাই তখন। সুন্দরবন নামটিতে যতটা সৌন্দর্য্য ঠিক ততটাই সুন্দর তার ভৌগোলিক চেহারা। সেখানে মানুষের প্রতিনিয়ত ডাঙায় বাঘ আর জলে কুমীর নিয়ে বেঁচে থাকা । চরাচর জুড়ে নোনাজলের ঐশ্বর্য্য যার অনন্ত, অসীম জলরাশির মাঝে লুকিয়ে থাকে অগণিত সজীব আর সবুজ। গল্পকারের ভাষায় যা হয়ে ওঠে মূর্ত, ভ্রমণপিপাসুর কলমে যা হয়ে ওঠে আরো প্রাণবন্ত। কালের স্রোতে তার ভূগোল পুরোনো হয়না এই বায়োডাইভার্সিটির অন্যতম নিদর্শনে ।
সুন্দরবনের জল-জঙ্গলের কাব্য |
বাঙলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়, গনগনি |
সত্যজিত রায়ের প্রিয় শ্যুটিং স্পট, মামাভাগ্নে পাহাড় |
গড়-পঞ্চকোটের কালের দলিল |
পরিত্যক্ত ভাঙা মন্দির পেরিয়ে কাঁসাই নদী দেখা গেল আর বাঁদিকে এল সেই মন্দিরময় পাথরা গ্রাম ।
মন্দিরময় পাথরা |
ছোট মন্দির, বড় মন্দির, মন্দিরের ধ্বংস স্তূপ আর মন্দিরের সংলগ্ন গ্রাম, খেত খামার, ধানের গোলা, পুকুর কি নেই এখানে । নানান ধরণের, নানান গড়নের । এক একটির ভাস্কর্য এক এক রকম ! তবে সবকটি মন্দিরই বাংলার ট্র্যাডিশানাল চালাঘরের আদতে বানানো । মন্দিরময় পাথরা গ্রামটির মানুষজন যেন যুগযুগ ধরে মন্দিরগুলিকে বুকে করে আগলে আসছে । মন্দিরের গায়ের লেখা থেকে জানা গেল যে সেগুলি প্রায় ৫০০ বছরের পুরোণো।
খড়গপুর থেকে কেশিয়াড়ির পথ ধরে কিছুদূর গেলেই পড়বে বিশাল দুর্গময় কুরুম্ভেরা। বাইরে বিশাল উঁচু প্রাচীর পরিবেষ্টিত দুর্গটি দশ ফুট উঁচু এবং বিশাল মাঠের মধ্যিখানে প্রায় ৩০ বিঘে স্থান জুড়ে এই দুর্গ ।
পাথর দিয়ে কেটে কেটে তৈরী । যেন চক মিলোনো রাজপ্রাসাদ ! একদিকে উঁচুতে নাটমন্দিরে তিনটি মন্দিরের গড়নে স্থাপত্য রয়েছে ।
এর মধ্যে একটি শিব মন্দির আছে । ওড়িয়া লিপি থেকে জানা যায় ১৪৩৮-১৪৬৯ সালে তৈরী হয়েছিল এই ফোর্টটি । ছমছমে দুর্গপুরীর দুর্গের নাম "কুরুম্ভেরা"। গুগলম্যাপ দিশা দেখিয়ে দেয় অচেনা ও অজানা এই সব পথের। নিজের শহরের এত কাছে আর্কিওলজিক্যাল সোশাইটির দেখভালে এত সুন্দর মন্দির আর দুর্গ যে রয়েছে তা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবেনা।
কুরুম্ভেরা দুর্গ |
প্রত্যূষে উত্তরদিকে তখনো জ্বলজ্বলে ধ্রুবতারা আর পশ্চিম আকাশে শুকতারা । অন্ধকার ভোরে কত রকমের শাঁখ ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে আসে আর আসে চিতি কাঁকড়ারা ছটফট করে ধেয়ে । সমুদ্রের বুকে জন্ম নেয় নতুন ঢেউ আর তীরে এসে ভাঙে । দেখতে দেখতে পুব আকাশের গায়ে রঙ ছেটাতে আসে ভোরের বালক সূর্য । আকাশ চিরে চিরে লাল, নীল, গোলাপী রঙের দাগ আর লুকোচুরি খেলতে খেলতে সেই আবীর রঙা আকাশের কোল থেকে উঁকি মারে সে ।
রূপসীবাংলার গল্প এক বৈচিত্র্যময় রূপকথার মত। এ গল্প ফুরোয়না। কালেকালে আরো যেন রূপবতী হয় আমার বাংলা। থৈ থৈ তার রূপ লাবণ্য নিয়ে।
গত শীতে আমরা কলেজের মেয়েদের গ্রুপ ভেবেছিলাম গনগনি যাবো । যেহেতু মেয়েরা তাই এক ট্র্যাভেল কম্পানির শরণাপন্ন হই । তাঁরা নামী কম্পানি । ওয়েবসাইট আছে । যোগাযোগ করলাম । যেতে চাই । দুদিন টালবাহানা করে জানালেন ওখানে প্রপার থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা নেই এবং নিরাপত্তা নিয়েও ওরা কিছু বলতে পারবেন না ।
ReplyDeleteএবার ভেবেছি গোরভাঙা যাবো বাউল ফকিরদের ডেরায় । করিমপুর থেকে যেতে হয় । কিন্তু করিমপুর ট্রেন যায়না । সড়ক পথে সময় বেশি নেবে । এবং ওখানেও একই সমস্যা । টয়লেট ও খাওয়া দাওয়া ।
ReplyDeleteThai bingo tips and tricks - Titanium Muffler
ReplyDeleteThai bingo tips and tricks is the name titanium bolt of the game of thai bingo. Thai bingo tips and tricks is the name of the game of thai bingo. Thai micro touch titanium trim where to buy bingo tips and tricks is the titanium ore terraria name of the game titanium tools of thai bingo. Thai bingo tips and tricks is the name of the game of thai black titanium rings bingo.