আবার তোমার আসার সময় হয়ে গেল । কিন্তু তুমি কি বোঝ যে তোমার জন্য সারাটা বছর চেয়ে থাকি, তোমার পথ চেয়ে ...তুমি কি জান আকাশের কত রঙ হয় শরতে? তুমি কি কখনো দেখেছ একরাশ কালোমেঘের দল যখন ভিন আকাশপুরে পাড়ি দেয় তখন পেঁজা-তুলোট মেঘভাসি আকাশে রঙধনুর বন্যা বয়ে যায় । তোমার জন্যে কাশফুলেরা হেসে গড়াগড়ি খায় । শিউলি উঠোন, পদ্মপুকুর থৈ থৈ সুখবৃষ্টি নিয়ে চকচক করে । কিন্তু তুমি কি দেখ এসব ?
আগমনীর ঢেউ বাতাসী-পুকুরে । মেয়েলি আলপনায় স্থলপদ্মে শিশির আঁকে তুলি দিয়ে । দুব্বোঘাস সবুজের শব্দ শোনায় । তুমি কি শুনতে পাওনা ?
আমি বসে বসে শুনি তোমার নূপুরের শব্দ । ঢেউ গুনি বাতাসে আর নীল আকাশে তোমার জন্য রোজ পাঠাই পদ্মপাতায় মোড়া একটা চিরকুট। তুমি কি সে চিঠি পেলেনা আজো? গানপুকুর পাড়ে, সুর সিঁড়ির ধারে তোমার জন্যে একলাটি আমি বসে থাকব কিন্তু। ধানক্ষেতে তোমার সবুজ দুপুর নিয়ে, শিউলির কমলা সকাল নিয়ে আর কাশ-কিশলয়ের রূপোলী বিকেল নিয়ে ...
পেয়েছিলে আমার পদ্মপাতায় মোড়া চিরকুট খানি ? আমি তো সেই মেয়ে যে তোমার আগুণ নিয়ে মেতে উঠি, তোমার ছায়ায় আমার ছায়াকে আবিষ্কার করি, তোমার আলো নিয়ে খেলা করি, তোমার আকাশে আমার শুকতারা ফুটিয়ে তুলি, তোমার ছন্দে আমার সুরের তুলি আঁকি মনের ক্যানভাসে ।
আজ তোমার কাশফুলেরা কথাবন্ধু আমার !
আজ তোমার কাশফুলেরা কথাবন্ধু আমার !
আজ তোমার শিউলিঝরণায় আমার কথাবৃষ্টি পড়ুক ঝরে, আমি তবু চাই তোমাকে আবার নতুন করে...
সেই শাপলা-শালুকের গোলাপী ডানায়, পদ্মপরাগ অনুরাগে, সেই উচ্ছ্বসিত আবেগে কাশেদের অভ্র-শুভ্র শীষে, তোমার নতুন ধানের ক্ষেতে, রোদের বাঁশির লুকোচুরি আমার সাথে, আজ শরতের একলা ভোরে
সেই কাশফুলেদের সুরে
তুমি চিঠি লিখো আমায়
সেই শিউলিফুলের মালাগাঁথায় , শিশির আঁকা শরত কথায় , কাশ-পদ্ম বনের ওপারে দেখা করো আমার সাথে !