Sunday, June 27, 2010

তরাই তুমি


আসছি আসছি করে বহুদিন পর তোমার কাছে যাচ্ছি ।
সেই যাওয়া হল কিন্তু সময় থাকতে যেতে না পারার দুঃখ ভুলতে পারছি না । 
পেরোলাম তোমার গাঁয়ের মুজনাই নদীর ভাঙা পাড়,
পাট শাকের সারি, প্রথম বৃষ্টির আনন্দে তোমার গাঁয়ের মেয়েরা নেমেছে ধানক্ষেতে, হাঁটুজলে কাদায় ঢলঢল যৌবন দেখলাম তাদের ।
শাল-সেগুনের বনে সবুজ আবীর অনেকটাই নিষ্প্রভ দেখছি এবার ।
কি আর করে ! দারিদ্র্য লুটে পুটে খাচ্ছে অরণ্য
উলুখাগড়া, চোরকাঁটা যে যেমন ছিল তেমনি রয়েছে ।
বর্ষার শুরুতে খালবিল লাফিয়ে উঠেছে ।
একমাথা ঘোমটা সরিয়ে জেলেবৌটির সে কি হাসি ।
মাদারিহাট, শিশুবাড়ি, রাঙালিবাজনা, এথেল বাড়ি তারপরেই আমার বাড়ি । কতদিন যাইনি গ্রামে। কতদিন বর্ষা দেখিনি । কতদিন দেখিনি তোমায় ।
তিস্তাও রয়েছে কোল আলো করে । চড়াও রয়েছে তার বুকে ।
জানিনা থৈ থৈ দেখতে পাব কিনা ।
সেই যে আমার পোড়ো গাঁয়ের রঙচটা মনখারপের স্মৃতি,
কত ব্যথা, কত সুখের প্রলেপ ।
আজ জলঢাকার তীর খালি পড়ে আছে জানো ?
হারিয়ে গেছে ময়নাগুড়ির মোড়, হুসনুডাঙার ধানজমির জোড় ।
হারিয়ে গেছে বিভূতিভূষণ, 
হারিয়ে গেছে আরণ্যক! তোমার তরাই লাবণ্য !